রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থানে করোনাভাইরাসের টিকা বিক্রির ঘটনায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কেউ জড়িত থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম বলেন, টিকা চুরি করার বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর। টিকা বিক্রির ব্যাপারে তদন্ত চলছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের কেউ জড়িত থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রবিবার (২২ আগস্ট) সকালে রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স ও হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা বলেন। গত ১৮ আগস্ট দিবাগত রাতে রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকার ‘দরিদ্র পরিবার সেবা’ নামে একটি ক্লিনিকে অবৈধভাবে করোনাভাইরাসের মডার্নার টিকা দেওয়ার অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির মালিক বিজয়কৃষ্ণ তালুকদারকে (৩৭) আটক করে পুলিশ।
এ সময় ক্লিনিকটি থেকে মডার্নার টিকার দুটি এম্পুল পাওয়া যায়। যার একটির মধ্যে টিকার আইসিক ছিল। এছাড়া মডার্নার টিকার খালি বক্স পাওয়া যায় ২২টি। সেগুলো জব্দ করা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, আমরা শুধু সংবাদমাধ্যম সূত্রে রাজধানীর একটি ক্লিনিকে টিকা বিক্রির খবর শুনেছি। এরকমভাবে আরো কতগুলো ক্লিনিক চুরি করে টিকা বিক্রি করছে সে খবর আমাদের জানা নেই। জেলা পর্যায়ে সেই সংখ্যাটা আরো বেশি হতে পারে। এদিকে, নিয়মবহির্ভূত টিকা নেওয়াদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির আশঙ্কা করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. বেনজীর আহমেদ। তিনি বলেন, টিকা একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় সংরক্ষণ ও নির্দিষ্ট নিয়মে পরিবহন করতে হয়। এর ব্যত্যয় হলে টিকা এর কার্যকারিতা হারাতে পারে। আর এসব সুবিধা সব জায়গায় না থাকায় চুরি করেও যদি টিকা বিক্রি করা হয়, সেটা কোনো কাজে লাগবে না।
বরং এর মাধ্যমে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার আশঙ্কা থাকে। তিনি বলেন, এভাবে টিকা বিক্রি ঠেকাতে না পারলে একসময় দেখা যাবে টিকার বদলে পানি দিয়ে বা কম পরিমাণে টিকা দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটবে। এতে টিকাগ্রহীতা একটা ফলস সিকিউরিটিতে ভুগবেন যে তিনি টিকা নিয়েছেন। আসলে ওই টিকা তার কোনো কাজেই আসবে না। তাই এভাবে টিকা বিক্রি ঠেকাতে এখন থেকেই কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ দেন এই বিশেষজ্ঞ। একইসঙ্গে টিকার সরবরাহ, বিতরণ, পরিবহন ও প্রয়োগের প্রতিটি পর্যায়ে কঠোর মনিটর করা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।